Saturday 22 May 2010

বুদ্ধ বাণী

0 comments

মানব জীবন বড়ই দুর্ল্ভ। অনেক পূণ্য প্রভাবে আমরা এই মনুষ্যজন্ম লাভ করেছি। পশু পক্ষি, গরু ছাগল কত প্রাণী এই দুনিয়ায় আছে। তাদের জ্ঞান শক্তি নেই। তারা উন্নত জীবন লাভ থেকে বঞ্চিত। তাদের সৎ কর্ম করার ক্ষেত্রও নেই।

মানুষের জ্ঞান ও চিন্তা শক্তি আছে। চিন্তা শক্তি দ্বারা মানুষ ভাল মন্দ বুঝতে পারে। সৎ চিন্তা দ্বারা মানুষ নৈতিক জীবন গঠন করতে পারে। বুদ্ধ ভিবিন্ন সময় ভিবিন্ন স্থানে মানব জীবনের নৈতিক উপদেশ প্রদান করেছেন।

নিম্নে কিছু উপদেশ সংক্ষেপে তুলে ধরছি...।

*) আত্ননির্ভরশীল হও। আত্নপ্রত্যয়ী হও। আত্নশরণই শ্রেষ্ট শরণ।

*) দুষ্কর্ম পরিত্যাগ করে সৎ কর্ম সম্পাদন কর। কায়, বাক্য ও মনে সংযম হও। মন থেকেই সৎ কর্ম ও দুষ্কর্মের ইচ্ছশক্তি উতপন্ন হয়। প্রসন্ন মনে কথা বললে ছায়ায় ন্যায় সুখ প্রদান করে। দুষ্ট মনে কাজ করলে দুঃখ ভোগ করতে হয়।

*) জীবে দয়া ও মহামৈত্রীই বুদ্ধদেশনার বৈশিষ্ট্য। মা যেমন তাঁর একমাত্র ছেলেকে প্রাণ দিয়ে রক্ষা করে। সেরুপ সকল প্রাণীর প্রতি অপ্রমেয় মৈত্রী পোষণ করবে। এটি মানসিক সৎ কর্ম।

*) মিথ্যা, লাগানো কথ, কটুক্তি, ব্রিথাবাক্য বলা থেকে বিরত হও। সত্য, প্রিয়, মিষ্টি ও অর্থপূর্ণ বাক্য বল। এগুলো স্ম্যক বাক্যের অন্তর্গত।

*) অস্ত্র, প্রাণী, মাংস, নেশা, বিষ- বাণিজ্য করবে না। এগুলো মিথ্যাজীবিকা। ধর্মের পরিপন্থী।

*) হিংসা ত্যাগ করে সকলের প্রতি মমতাশীল হও। পরের দুঃখে দঃখী হও। পরের সুখে সুখী হও। দুঃখকে সমভাবে দেখ। এ চারটি যথাক্রমে মৈত্রী, করুণা, মুদিতা ও উপেক্ষা ভাবনা। যার নাম ব্রহ্মবিহার।

*) মূর্খের সেবা করবে না। পণ্ডিতের সান্নিধ্যে যাবে। পূজনীয় ব্যক্তিকে পূজা করবে।

*) মাতা পিতা, স্ত্রী পুত্রের ভরণপোষন করবে। সত্য বিষয়ে জ্ঞান লাভ করবে। বিবিধ শিল্প শিক্ষা করবে।

*) ক্ষমাশীল, গুরুজনের আদেশ পালনে সুবাধ্যতা, শীলগুণসম্পন্ন ভিক্ষু - শ্রামণদের দর্শন ও ধর্মালোচনা করবে।

*) পাপী বন্ধু ও নিক্রিষ্ট ব্যক্তির সংসর্গে থাকবে না। কল্যাণমিত্র ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিরদের সান্নিধ্যে থাকবে।

*) দুশ্চরিত্র ও অসমাহিত চিত্তে শত বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সতচরিত্র ও ধ্যানী ব্যক্তির একদিনের জীবনও শ্রেয়।

বৌদ্ধরা কি মূ্র্তি পূজারী?

0 comments
অনেকে আমাকে বলে "আপনারা মূ্র্তি পূজারী। মূ্র্তিকে পূজা করেন। মূ্র্তিতে কি আছে? আমি তাদের বলি, আমি মূ্র্তি পূজা করি না, জ্ঞানীর পূজা করি। বুদ্ধ অর্থ হল জ্ঞনী। আমিন জ্ঞানীর পূজা করি।

গত রোজার সময় এক জনের সাথে এনিয়ে আমার মুদু তর্ক হয়েছিল।

সে ব্যক্তি আমাকে বলে " আ‍পনি তো মূ্র্তি পূজারী"
আমি বললাম,- না আমি মোটেই মূ্র্তি পূজারী নই। সে বলে আমি তো আপনাকে প্রায় দেখি মূ‍র্তি পূজা করতে।
আমি তাখে প্রশ্ন করলামঃ- বাংলাদেশীরা কি কংক্রীট পিলার পূজারী?
সাথে সাথে জানালো তা হবে কেন?
আমি বললাম ঠিক কথা। বাংলাদেশীরা কংক্রীট পিলার পূজারী হবে কেন।
তাকে বললাম মহান একুশে ফেব্রুয়ারী আমরা উদযাপন করি। আমাদের ভাষা আন্দোলানের দিন।আমারা গান করি" আমার ভাইয়ের রক্কে রাঙানো এক‍ুশে ফেব্রূয়ারী কিংবা দেশের গান। ফুল-মালা নিয়ে আমরা শহীদ মিনারে যাই। সেখানে পৌছলে মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানাই। আর শহীদ মিনারে ফুল দিই। কি আছে শহীদ মিনারে? তিনটা কংক্রীতের পিলার আছে। মাঝখানেরটা একটু উচু, পাশের দুটো একটু নিচু। এখন বাইরের বা বিদেশের কোন লোক বলে যে, বাংলাদেশের মানুষেরা কংক্রীট পিলার পূজারী, ঠিক হবে?না। বাংলাদেশীরা কংক্রীট পিলার পূজারী হবে কেন? ২১শে ফেব্রুয়ারীকে মনে রাখার জন্য এভাবে তিনটা কংক্রীটের পিলার বানানো। সেটাকে দেখলেই বাঙ্গালীরা জানে এটা ২১ শে ফেব্রুয়ারীর একটা স্মরনীয় চিহ্ন। ভাষা আন্দোলনের শহীদের একটা চিহ্ন।
আর ঠিক তেমনি, আমি বা বৌদ্ধরা মূ‍র্তি পূজা করি না। উনি বুদ্ধ, পর্থিবীতে এসেছিলেন সত্য। এটা প্রশাণের জন্য, এটা স্মরণের জন্য। যেমনি করে আমরা আমাদের পিতা-মাতা, গুরুজনদের ছবি রাখি; সে জন্যে আমরা যখন বুদ্ধ মূ্র্তির সামনে এস বন্দনা করি মূ্র্তি মনে করে বন্দনা অবশ্যই আমরা করি না। মনে করি স্বয়ং বৃদ্ধ বসে আছেন। তখন অন্তরে অনেক প্রশান্তি আসে।


জগতের সকল প্রাণী সুখি হোক........